
আবারও দুর্গাপুজোয় নিজের ছবি নিয়ে ফিরতে চলেছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় (Srijit Mukherjee)। ২০১৯ সালের দুর্গাপুজোয় শেষবার মুক্তি পেয়েছিল সৃজিত পরিচালিত 'গুমনামী'। তারপর করোনা কাল শুরু হয়। এর মাঝে আর পুজোয় আসেনি সৃজিতের সিনেমা। ২০২৩ এর দুর্গাপুজোয় 'দশম অবতার' (Dasham Avtaar) নিয়ে বড় পর্দায় প্রত্যাবর্তন হতে চলেছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের। ২০ জুলাই, বৃহস্পতিবার বাগবাজারের বসু বাটিতে হয়ে গেল সিনেমার লোগো লঞ্চ।
তবে তিন বছর পর ছবি নিয়ে পর্দায় আসছেন পরিচালক। তাই তিনি একটু সাবধানী। সৃজিত তাঁর অন্যতম হিট সিনেমা 'বাইশে শ্রাবণের' নস্টালজিয়া ছুঁয়ে দশম অবতারের চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সিনেমার মোশন লোগো লঞ্চে পরিচালক বলেছেন, 'বাইশে শ্রাবণ যেখানে শেষ হয়েছে, সেখান থেকে শুরু হবে দশম অবতারের গল্প।'
এই ছবিতে থাকবেন বাইশে শ্রাবণের অফিসার প্রবীর রায়চৌধুরী এবং ভিঞ্চি দা সিনেমার অফিসার বিজয় পোদ্দারকে। আজ এই দুই অভিনেতাকে দেখা গিয়েছে মোশন লঞ্চে। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে দেখা গিয়েছিল বাইশে শ্রাবণের প্রবীরের চেহারায়। এদিকে অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে দেখা গিয়েছে বিজয় পোদ্দারের রূপেই। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা যীশু সেনগুপ্ত এবং অভিনেত্রী জয়া এহসান।
ছবিতে গানের দায়িত্বে থাকবেন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, রূপম ইসলাম এবং অনুপম রায়। বাইশে শ্রাবণের হিট গানগুলির পর এর সিক্যুয়েল দশম অবতারের গান নিয়েও প্রত্যাশা বাড়ল দর্শকদের। ছবির শ্যুটিং হতে চলেছে কলকাতার আনাচে কানাচে। ইতিমধ্যেই পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় রেইকি করে শ্যুটিংয়ের জায়গাও ঠিক করে ফেলেছেন। শুক্রবার, ২১ জুলাই থেকে শুরু হবে সিনেমার শ্যুটিং। সিনেমা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে পুজো পর্যন্ত।
প্রসূন গুপ্ত: শাহরুখ খানের (Shahrukh Khan) পাঠান কি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাণিজ্যিক ছবি, প্রশ্ন মুখে মুখে। কী এমন ঘটনার উপর দাঁড়িয়ে পাঠান যে, সিনেমাপ্রেমীরা উন্মাদ হয়ে গিয়েছে ছবির (Pathan) একটা টিকিট জোগাড় করতে? এমন কী হলো যে প্রথম দিনেই ১০০ কোটির বেশি বাণিজ্য (Box Office collection) করলো পাঠান। এরকম হাজারো প্রশ্ন কর্পোরেট অফিস থেকে চায়ের দোকানে। এই কলকাতায় ৫০-৬০-র দশকে ৪ বছর অশোক কুমারের 'কিসমত' ছবিটি ধর্মতলার রক্সি সিনেমায় চলেছিল। দুর্দান্ত হিট হিসাবে মোটেই নয় আসলে রক্সি হাউস বিক্রি হয়ে যাচ্ছিলো তাই জোর করে সিনেমাটি চালানো হয়েছিল।
এরপর বিগ হিট 'শোলে'। জ্যোতিতে কয়েক বছর চলেছিল, অবশ্যই সুপারহিট ছবি হিসাবে। এরপর মুম্বইয়ের মারাঠা মন্দিরে 'দিলওয়ালে দুলহনিয়া যে জায়েঙ্গে' ছবিটি ২৫ বছর ধরে শ্রেফ নুন শোয়ে চলেছে। পাঠান কি এদের থেকেও বড় হিট ছবি? ওভাবে আজকের সিনেমাকে বিচার করা যাবে না।
আজকের দিনে ভারতে সিনেমা হাউসের ৯০ শতাংশ উঠে গিয়েছে। এখন ছবি চলে মাল্টিপ্লেক্সে। এই মাল্টিপ্লেক্সগুলিতে অনেকগুলি স্ক্রিন বা আলাদা হল আছে। এখানে নিয়ম কানুনের বালাই নেই। ৫-৬টি শো হয় একেকটা স্ক্রিনে। যদি বিক্রির বহর কম থাকে তবে অনায়াসেই কাঙ্খিত সিনেমা পাল্টিয়ে অন্য ছবি দেখানো যেতেই পারে। ওই যুগে টিকিটের দাম ছিল ৯০ পয়সা থেকে বড় জোর ৫ টাকা। হয়তো ভাববেন তক্ষকের আমল আর আজকের আমলে মস্ত তফাত।
কিন্তু তাই বলে ৫০০ বা ১০০০ টাকার টিকিট? তুলনায় হয় না। যার পোষাবে দেখবে, না পোষালে দেখো না। কিন্তু যেভাবেই হোক দেখছেই। একটি ছবির পিছনে ১৫০-২০০ কোটি টাকা ন্যূনতম খরচ। ছবি এই স্ক্রিনগুলিতে সারা ভারতে রিলিজ করলে দু'সপ্তাহের মধ্যে টাকা উঠে লাভের মুখ দেখে ডিস্ট্রিবিউটররা। পাঠান ছবিও তাই।
এমনভাবে বিভিন্ন শহরে স্ক্রিন নিয়ে নেওয়া হয়েছে, যে কয়েকশো কোটি টাকা লাভ করবে সিনেমাওয়ালারা এই ছবি থেকে। তার অর্থ এই নয় যে শোলে বা ডিডিএলজি-র থেকে জনমানসে হিট ছবি। পাশাপাশি বাংলা ছবি ওই স্ক্রিন পাচ্ছে না বলে জনতার সেন্টিমেন্ট আদায় করতে চাইছে। কিন্তু হিন্দি বা বাংলা সব ছবিই ব্যবসা করতে নেমেছে, এখানে সেন্টিমেন্টের কোনও মূল্য নেই। মানুষ বিপুল পয়সা খরচ করে সিনেমা দেখতে যাচ্ছে তাই নিজের পছন্দই বেছে নেবে।