
জনবহুল এলাকায় দিনেদুপুরে মধুচক্রের হদিশ। বাঁকুড়ার পালিতবাগান থেকে হাতেনাতে ৪ জনকে ধরে পুলিসের হাতে তুলে দিল উত্তেজিত জনতা।
শহরের জনবহুল এলাকা এই পালিতবাগান। আর সেখানেই রমরমিয়ে চলছিল এই অসাধু কাজ। দিনেদুপুরে মধুচক্র চালানোর অভিযোগে দুই মহিলা ও দুই পুরুষকে তালাবন্দি করে রাখে স্থানীয় মানুষ। জানা যায়, ওই বাড়িতে বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্তরা প্রবেশ করলে এলাকার বাসিন্দারা সেই বাড়ির দরজা বাইরে দিক থেকে তালাবন্ধ করে দেয়। এরপর ভিতরে থাকা যুবক ও তরুণীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রসঙ্গত, বাঁকুড়ার পালিত বাগান এলাকার একটি বাড়িতে বেশ কিছুদিন ধরেই চেনা ও অচেনা পুরুষ ও মহিলাদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছিল। ইদানিং সেই আনাগোনা আরও বৃদ্ধি পায় বলে স্থানীয়দের দাবি। এরপরই এলাকার মানুষের মনে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই ওই বাড়িতে বিভিন্ন সময় একাধিক মহিলার আনাগোনা দেখা যেত। রাস্তা দিয়ে চলার জায়গা থাকত না। দীর্ঘক্ষণ বহু গাড়ি রাস্তার উপরই রেখে দেওয়া থাকত। ফলে অসুবিধায় পড়ত সাধারণ মানুষ থেকে পথচলতি সকলেই। একাধিকবার পাড়ার লোকজন প্রতিবাদ করলেও কোনও সুরাহা মেলেনি। এরপরই বৃহস্পতিবার সকালে ওই বাড়িতে আসা দুই যুবক ও দুই তরুণীকে ঘরবন্দি করেন স্থানীয়রা। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াতেই স্থানীয় থানায় খবর দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় খবর পেয়ে পুলিস ওই বাড়িতে গিয়ে বন্দি চারজনকে উদ্ধার করে বাঁকুড়া সদর থানায় নিয়ে যায়।
এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, মালিকের পরোক্ষ মদতে দীর্ঘদিন ধরেই বাড়িটিতে মধুচক্র চলছিল। মাঝে মধ্যেই বাড়িটিতে মাদকের আসর বসত বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। এই অবস্থায় এলাকার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকার মানুষ। ওই রাস্তায় পাড়ার ছোট বাচ্চারা খেলাধুলা করে। পাড়ায় যুবক সহ একাধিক মানুষের যাতায়াত ওই রাস্তা দিয়েই। তাই অবিলম্বে এই ব্যবসা বন্ধের পাশাপাশি আটক হওয়া চারজনের কঠোরতম শাস্তির দাবি জানায় স্থানীয়রা।
দীর্ঘ ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইটভাটা বন্ধ। তিন মাস বন্ধের জেরে কাজ হারিয়ে দিশাহীন ইটভাটার হাজার শ্রমিক। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর লাগোয়া মথুরামহল এলাকার ঘটনা।
ইটভাটা কর্তৃপক্ষের দাবি, তিন মাস আগে বিষ্ণুপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুনীল দাস নিজের প্রভাব খাটিয়ে সংলগ্ন কালভার্ট ভেঙে ইটভাটার মূল রাস্তা বন্ধ করে দেন। অভিযোগ, ওই তৃণমূল নেতা রীতিমতো হুমকি দিয়ে ইটভাটা বন্ধ করে দেন। পরে বিভিন্নভাবে ইটভাটা কর্তৃপক্ষের কাছে মোটা টাকা কাটমানি চাওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠে। ইটভাটা কর্তৃপক্ষর আরও অভিযোগ, সেই টাকা না দেওয়ার কারণে গত ৩ মাস ধরে ইটভাটার মূল রাস্তা কেটে দেওয়া হয়। যার জেরে ইটভাটার ইট বিক্রি এবং উৎপাদন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ। ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন ইটভাটা কর্তৃপক্ষ ও এই ইটভাটার সঙ্গে যুক্ত প্রায় হাজার শ্রমিক। তিন মাস ধরে চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা।
তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে সরকারি বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ জানিয়েও কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে অভিযোগ ইটভাটা কর্তৃপক্ষের। স্থানীয় পুলিস প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলাশাসক, পুলিস সুপারের কাছে অভিযোগ ইটভাটা কর্তৃপক্ষর।
একদিকে রাজ্যে শিল্প গড়ে উঠুক, চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক তখনই একটি চালু শিল্প বন্ধে আতান্তরে ইটভাটা কর্তৃপক্ষ থেকে শ্রমিকরা।
পুরো বিষ্ণুপুর জুড়ে তৃণমূলের দাদাগিরি চলছে। এমনই দাবি বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক বিজেপি জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তির। বিজেপি কর্মহীন শ্রমিকদের পাশে আছে বলে জানান তিনি।
তবে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি তৃণমূল নেতা শ্যামল সাঁতরার। দল শ্রমিকদের পাশে আছে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
শিল্পবান্ধব বলে দাবি করা শাসকদল এবার শ্রমিক স্বার্থে কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই দেখার।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড বাঁকুড়ার জয়পুরে। অগ্নিকাণ্ডের জেরে উড়ে গেল বাড়ির ছাউনি। আশপাশে থাকা গাছেও লাগে আগুন। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।
জানা যায়, মঙ্গলবার সাতসকালে গ্যাসের পাইপ লিক করে সিলিন্ডার বার্স্ট করে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ওই ঘটনা ঘটে জয়পুরের সোলদা গ্রামে। অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর ঘরের ছাউনিও উড়ে যায়। এরই পাশাপাশি নারকেল গাছেও আগুন লেগে যায়। স্থানীয় গ্রামবাসীরা খবর পাওয়ার মাত্রই ছুটে আসেন ওই বাড়িতে। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় স্থানীয় পুলিস-প্রশাসন ও দমকল কর্মীদের। তবে তাদের আসতে সময় লাগায় স্থানীয়রাই তড়িঘড়ি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে জল দিতে থাকেন। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় আগুন নেভাতে কিছুটা সক্ষম হন তাঁরা।
পরে পুলিস-প্রশাসন ও দমকল কর্মীদের সহযোগিতায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পুলিস সূত্রে জানা যায়, আগুনের ভয়াবহতা অনেকটাই ছিল। সময়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে না আনলে আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। তবে ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই।
ওই এলাকার প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে রান্না করতে গিয়ে গ্যাসের পাইপ লিক হয়ে এই দুর্ঘটনা বলে অনুমান। নষ্ট হয়েছে বেশ কিছু জিনিস। একটুর জন্য রক্ষা পেয়ে গেছেন তাঁরা।
তবে আসলে ঠিক কী কারণে ভয়াবহ আগুন, তা এখনও জানা যায়নি।
প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নদীগর্ভ থেকে বালি উত্তোলন কোনও নতুন ঘটনা নয়। রাজ্যের নানা প্রান্তে অব্যাহত বালি মাফিয়ারাজ। সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল বাঁকুড়ার পাত্রসায়র থানার পাঁচপাড়ায়।
দামোদর নদ থেকে বালি তোলাকে কেন্দ্র করে ফের রণক্ষেত্রের চেহারা নিল বাঁকুড়ার পাত্রসায়র থানা এলাকার নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচপাড়া গ্রাম। বালি মাফিয়াদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে যান গ্রামের মানুষ। প্রতিবাদে পুরুষদের পাশাপাশি বাড়ির মহিলা সদস্যরাও রাস্তায় নেমে পড়েন বিক্ষোভ দেখাতে। উল্টোদিক থেকে বালি মাফিয়ারা লাঠিসোটা নিয়ে তেড়ে আসে গ্রামবাসীদের উপর। অভিযোগ, গ্রামবাসীদের ফেলে মারধর করে তারা।
প্রসঙ্গত, গত বছর পাঁচপাড়া সংলগ্ন দামোদরের এই নদীঘাটে বালি তোলাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বোমাবাজি হয়। যার জেরে প্রশাসনের তরফে ওই বালিখাদ বন্ধ করে দেওয়া হয়। চলতি বছরে ফের ওই জায়গা থেকে বালি তোলার কাজ শুরু হয় বলে অভিযোগ। এরপরই গ্রামবাসীরা বাধা দিলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় ও দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পাত্রসায়র থানার পুলিস। বালি মাফিয়াদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামবাসীরা। পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সরব তাঁরা।
গ্রামবাসীদের তরফে দাবি, গ্রাম সংলগ্ন নদীঘাট থেকে অবৈধভাবে বালি তোলার ফলে এলাকার চাষের জমি, বাস্তুভিটে, স্কুলবাড়ি নদীগর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা।
বালি মাফিয়ারাজ বন্ধ করতে শাসকদলকে একাধিকবার বলা হয়েছে। তবুও দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। প্রতিবাদ করলে অত্যাচারিত হতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। তাদের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে, ঘটনার সমালোচনায় সরব বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তি।
তবে অভিযোগ পেলে বালিমাফিয়া দৌরাত্ম্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তৃণমূল বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায়।
প্রশাসন কি সব জানে? হয়তো জানে। তাহলে বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য রোখা যাচ্ছে না কেন? প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের।
বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডার গ্র্যাজুয়েট স্তরের প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা হয়েছিল চলতি বছর জুন মাসে। ওই মাসের শেষেই ফলাফল প্রকাশিত হয়। কিন্তু তারপর ৫ মাস কেটে গেলেও মার্কশিট হাতে পায়নি পড়ুয়ারা। অবশেষে সেই মার্কশিট কলেজে কলেজে পৌঁছয়। তবে বিতরণ করা গেল না মার্কশিট। কারণ, অধিকাংশ মার্কশিটেই ক্রমিক সংখ্যা একই। বিষয়টি নজরে আসতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত সমস্ত কলেজেই মার্কশিট বিতরণ স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়।
বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দুটি সরকারি ও দুটি বেসরকারি কলেজ সহ মোট ২৭ টি কলেজে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কোর্স করানো হয়। এই ২৭ টি কলেজেই আন্ডার গ্রাজুয়েট স্তরে প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ হয় এই বছরের ৭ জুন। দুটি সেমিস্টার মিলিয়ে পরীক্ষা দেয় প্রায় ১৮ হাজার ছাত্র ছাত্রী। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ৩০ শে জুন ফলাফল প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে পড়ুয়াদের মার্কশিট আপলোড করা হলেও মার্কশিটের হার্ডকপি দীর্ঘদিন ধরেই অধরা ছিল তাদের। দীর্ঘ ৫ মাস ধরে টালবাহানার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি কলেজগুলিতে প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টারের মার্কশিটের হার্ডকপি পাঠায়। সেই মার্কশিট কলেজে কলেজে পৌঁছানোর পর দেখা যায় একটা বড় অংশের মার্কশিটে ক্রমিক সংখ্যা একই। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মার্কশিট বিতরণ শুরু করার আগেই ভুল ধরা পড়ায়, তড়িঘড়ি মার্কশিট বিতরণের স্থগিত রাখার নির্দেশিকা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে মার্কশিট দেওয়ার দিন ঘোষণার পরেও তা পড়ুয়াদের হাতে দিতে পারেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই হয়রানির স্বীকার হতে হয় হাজার হাজার পড়ুয়াকে।
পড়ুয়াদের দাবি, এই হয়রানির ফলে বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। তবে তাদের অনুরোধ তাদের মার্কশিট যাতে দেওয়ার ব্যবস্থা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজগুলির দাবি, মার্কশিটের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আরও সচেতন হওয়া উচিৎ ছিল। কলেজ পড়ুয়াদের এর ফলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
তবে এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি ছাপাখানা সংস্থার ভুলেই এমন ঘটনা হয়েছে। তবে আগামী সোমবারের মধ্যে পুনরায় মার্কশিট সংশোধিত করে কলেজগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় আগেই ওয়েবসাইটে মার্কশিট আপলোড করে দেওয়ায় এই ভুলের জন্য কোনও পড়ুয়াকে সমস্যায় পড়তে হবে না বলেও দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
একটি সেতু বদলে দিতে পারে গোটা এলাকার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি। ২০১৭ সালে ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করে ঢাকঢোল পিটিয়ে সেতু তৈরি কাজ শুরু হলেও, এরপরে গোটা কাজ থমকে গেছে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে। বাঁকুড়া দিয়ে বয়ে চলেছে দ্বারকেশ্বর। দ্বারকেশ্বরের একপারে ব্লক সদর ওন্দা। অপরদিকে নিকুঞ্জপুর আশাপুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। ফলে এক প্রকার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁকুড়ার ওন্দার গামিদ্যা, অযোধ্যা, নিকুঞ্জপুর, আশাপুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে দ্বারকেশ্বর পেরিয়ে ওপারে ওন্দা বাজারে যেতে হয়। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার করে নৌকার ভরসায়। বর্ষায় দ্বারকেশ্বর মাতাল হলে বন্ধ রাখতে হয় নৌকা চলাচল। তখন সমস্যায় পড়েন এলাকার মানুষ। যার ফলে টান পড়ে এলাকার মানুষের রুটি-রুজিতে। মোটের ওপর জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ে।
নৌকা চালক নয়ন ঘোড়ুই বলেন,মানুষকে যতদূর সম্ভব সুরক্ষিত রেখেই যাতায়াত করা হয়। জল বেড়ে গেলে প্রশাসনের নির্দেশে বন্ধ থাকে নৌকা চলাচল। নৌকায় সাইকেল নিয়ে ১০ টাকা নেওয়া হয় ও মোটরসাইকেল নিয়ে ২০ টাকা নেওয়া হয়।
মূলতঃ কৃষি প্রধান এই এলাকার মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহের অন্যতম জায়গা ব্লক সদর ওন্দা। কিন্তু গামিদ্যা-ওন্দা মূল রাস্তার মাঝে বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছে দ্বারকেশ্বর নদ। ভোট আসে ভোট যায়। সেতুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট বৈতরনী পার করা হয়। কিন্তু ভোট পেরোলেই কেউ কথা রাখেনা। এলাকার বিধায়ক গেরুয়া শিবিরের। আর তার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে মানুষের দুর্দশার কথা না ভেবে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। আর তাই অসহযোগিতা করে শাসক দল। সুর চড়ালেন বিজেপির রাঢ়বঙ্গ কনভেনার পার্থ কুণ্ডু।
সমস্যার কথা মানছেন প্রত্যেকে। পাশাপাশি অতিমারী পরিস্থিতি বর্ষার কারণে কাজ থমকে গিয়েছে বলে সাফাই পূর্ত কর্মাধ্যক্ষর । ফের শুরু হবে কাজ। অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। তৈরি হবে ইতিহাস। আশ্বাস দেওয়া হল শাসক দলের পক্ষ থেকে।
প্রতিদিন ঝুঁকির পারাপার। নদীর একধারে সমস্ত প্রশাসনিক দফতর, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল। তবে প্রশাসনের তরফে মিলেছে আশ্বাস। সেই আশ্বাসেই ভরসা রাখছেন এলাকাবাসী।
সিপিএম নেতানেত্রীদের দুয়ারে বিজেপি বিধায়ক। ফুল, মিষ্টি দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় ও কথাবার্তা, যাকে ঘিরে জোর জল্পনা বাঁকুড়ায়। সৌজন্য বিনিময়, না এর পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য, উঠছে প্রশ্ন। পুর নির্বাচনে সিপিএমকে কাছে টানতেই কি দুয়ারে বিজেপি বিধায়ক? যদিও একে কেবল সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ বলেই দাবি করছে দু-পক্ষ। তৃণমূল অবশ্য এই সাক্ষাৎকে সিপিএম-বিজেপির জোটবদ্ধের আগাম প্রাস্তুতি হিসেবে দেখছে।
পুর নির্বাচনের দিনক্ষণ এখন নির্বাচনের কমিশনের হাতে। তবে পুরসভার নির্বাচন যে আসন্ন, তার ইঙ্গিত জঙ্গিপুরের প্রশাসনিক সভা থেকেই দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচন যখনই হোক, প্রস্তুতি তুঙ্গে রাজনৈতিক দলের। বাঁকুড়ায় অন্তত এমন ছবিই সামনে আসছে।
দলীয় কর্মীদের বৈঠক থেকে জনসংযোগ, বিভিন্ন দলের ভোটপ্রস্তুতি চলছে বাঁকুড়া শহর জুড়ে। এর মাঝেই রাজনৈতিক জল্পনা উস্কে দিল সিপিএমের দুয়ারে বিজেপি বিধায়কের যাওয়ার ঘটনা। মঙ্গলবার সন্ধ্যাবেলায় বাঁকুড়া শহরের কমরার মাঠ এলাকায় প্রবীণ সিপিএম নেতা কিংকর পোষাকের বাড়িতে আচমকা হাজির হয়ে যান বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নিলাদ্রিশেখর দানা। হাতে ফুল ও মিষ্টি নিয়ে সিপিএম-এর প্রবীণ লড়াকু নেতার সাথে বিজেপি বিধায়কের এই সাক্ষাৎ ঘিরে শুরু হয়ে যায় জোর জল্পনা। প্রায় মিনিট ১০ থাকার পর ওই এলাকায় আর এক সিপিএম নেতার বাড়িতে যান বিধায়ক।
এরপরে বাঁকুড়া শহরের শুভঙ্কর সরণি এলাকায় বাঁকুড়া পুরসভার সিপিএমের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা সিপিএম নেত্রী শিউলি মিদ্যার বাড়িতে হাজির হন বিজেপি বিধায়ক। নিরাপত্তারক্ষীদের বাইরে রেখে ফুল ও মিষ্টি নিয়ে ঢুকে পড়েন সিপিএম নেত্রীর বাড়িতে। বেশ খানিক্ষণ চলে দুজনের মধ্যে কথোপকথন। হঠাৎ বিজেপি বিধায়কের সিপিএম নেতা নেত্রীর বাড়িতে শুভেচ্ছা বিনিময় পর্বের পিছনে রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে বলেই মত অনেকের।
বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নিলাদ্রিশেখর দানা বলেন, সিপিএম নেত্রী শিউলী মিদ্যার বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর মনে হল, একবার দেখা করে যাবেন। আর দিদির বাড়িতে খালি হাতে কীভাবে যাবো। তাই মিষ্টি কিনে নিয়ে যাই। এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না।
এ বিষয়ে বাঁকুড়ার সিপিএম নেত্রী শিউলী মিদ্যা বলেন, বাঁকুড়ার সব দলের নেতা-নেত্রীর মধ্যে সখ্যতা রয়েছে। অন্য রাজনৈতিক দলের কেউ তাঁর বাড়িতে এসছেন বলে তাঁর মনে হয়নি।
অপরদিকে তৃণমূল নেতা বলেন, আগামী পুরভোটে জোট বাঁধতে চলেছে বিজেপি সিপিএম। নিলাদ্রিবাবুর সিপিএম নেতার বাড়ি বাড়ি যাওয়া থেকে তা স্পষ্ট বলে জানালেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ৪ ঠা ডিসেম্বর বাঁকুড়ার মাচানতলায় প্রকাশ্য সভায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কন্ঠে শোনা গিয়েছিলেন প্রাক্তন সাংসদ ও প্রবীণ সিপিএম নেতা বাসুদেব আচারিয়াকে নিয়ে প্রশংসার সুর। বিজেপি সভাপতির সিপিএম নেতাকে নিয়ে প্রশংসার সুরকে রাজনৈতিক মহল সিপিএমকে কাছে টানার কৌশল বলে মনে করছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতির দেখানো পথে হেঁটে বাঁকুড়ায় সিপিএম নেতানেত্রীর বাড়িতে হাজির হয়ে সাক্ষাৎ করলেন বিজেপি বিধায়ক নিলাদ্রিশেখর দানা। বিজেপি রাজ্য সভাপতির মুখে সিপিএম নেতার প্রশংসার পর বিজেপি বিধায়কের সিপিএম নেতানেত্রীর দুয়ারে পৌঁছে যাওয়ার পিছনে রাজনৈতিক যুক্তি আছে বলেই মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।
বাঁকুড়া জেলার দুটি জুনিয়র হাইস্কুল বন্ধ অথবা বন্ধের মুখে। জেলায় যে দুটি জুনিয়র হাইস্কুল আছে, তার মধ্যে একটি হল বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল এলাকার নেতুরপুর গার্লস জুনিয়র হাইস্কুল। আর অন্যটি হল ইন্দাস ব্লকের বেলবাঁন্দী জুনিয়র হাইস্কুল।
বাঁকুড়ার ইন্দাসের বেলবাঁন্দী জুনিয়র হাইস্কুল দীর্ঘ প্রায় ১০-১১ বছর যাবৎ সমস্যায়। একজন শিক্ষক এবং একজন ক্লার্ক দিয়ে স্কুল চলত। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্কুলে অনেকগুলি ক্লাসরুম থাকলেও নতুন করে কোনও শিক্ষক দেওয়া হয়নি। তাই এলাকার ছাত্রছাত্রীরা আর এখানে ভর্তি হয়নি। অন্য জায়গায় গিয়ে তারা ভর্তি হচ্ছে।
এই স্কুলের এক প্রাক্তন ছাত্রও জানাল তার করুণ অভিজ্ঞতার কথা। তার কাছ থেকেই জানা গেল, কেন ছাত্ররা এখান থেকে অন্যত্র চলে গেছে।
অন্যদিকে জঙ্গলমহলের নেতুরপুর জুনিয়র গার্লস হাইস্কুলে অন্য ঘটনা। সেখানে রয়েছে ৩৬ জন ছাত্রী এবং শিক্ষিকা সংখ্যা রয়েছে ৫ জন। তাই কি স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত? তবুও এলাকার মানুষ এবং ছাত্রীদের দাবি, এখানে পঠনপাঠন ভালোই হত। যদি এই স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে তাদের খুবই সমস্যায় পড়তে হবে। কারণ তাদের অনেকটা দূরে স্কুল যেতে হবে। তাই তাদের দাবি, স্কুল অবিলম্বে চালু হোক।
এলাকার এক অভিভাবক জানালেন, স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে তাঁরা শুনেছেন। এতে তাঁরা খুবই অসুবিধায় পড়বেন।
আরেক অভিভাবকের আক্ষেপ, কেন যে এই স্কুল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা তাঁরা জানেন না। কিন্তু তাঁরা চান, স্কুলটি থাকুক। সরকার যেন এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করে।
এখন দেখার, এই স্কুলদুটির কী পরিণতি হয়।
অবশেষে গঙ্গাধর পেল ভোটার কার্ড। স্থানীয় মহকুমা শাসক অনুপকুমার দত্ত গঙ্গাধরের বাড়িতে গিয়ে তার হাতে সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র তুলে দেন। এখন সে ভারতীয় নাগরিক। তবে কেন তাকে ৪ বছর ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকতে হয়েছিল? তার উত্তর দেবে কে? এই ঘটনা নিয়ে অবশ্য শাসক-বিরোধী উভয়েই কাদা ছোঁড়াছুঁড়িতেই ব্যস্ত।
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের রাধানগর গ্রামের যুবক গঙ্গাধর পরামানিক। প্রসঙ্গত, মাত্র ১৬ বছর বয়সে বাড়ি থেকে কাজের খোঁজে বেরিয়ে সে অসমে পৌঁছয়। সেখানে কিছুদিন হোটেলে কাজ করে সে। সঙ্গে সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ২০১৭ সালে অসম সীমান্ত শাখার পুলিস তাকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে গ্রেফতার করে। পরে ওই বছরেরই ১২ ডিসেম্বর থেকে 'গোয়ালপাড়া ডিটেনশন ক্যাম্পে' জায়গা হয় তার। পরে অসমের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সৌজন্যে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পায় সে। তারপরই চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রাধানগরের বাড়িতে ফেরে গঙ্গাধর পরামানিক। তখন থেকেই সচিত্র পরিচয়পত্র বানানোর জন্য গঙ্গাধর পরামানিক স্থানীয় ব্লক অফিসে জমা দেয় তার প্রয়োজনীয় নথিপত্র।
অবশেষে বিষ্ণুপুর মহকুমা শাসকের সৌজন্যে সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র হাতে পেয়ে খুশি এক সময় নিজভূমে পরবাসী জীবন কাটানো গঙ্গাধর পরামানিক। মহকুমা শাসক অনুপ কুমার দত্ত বলেন, ভোটার পরিচয়পত্র না থাকায় অসমে কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিল রাধানগরের গঙ্গাধর। সেখান থেকে ফেরার পর সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের জন্য সে আবেদন করেছিল। সমস্ত তথ্যপ্রমাণ যাচাই করে তার হাতে এই পরিচয়পত্র তুলে দেওয়া হল।
ভোটের কার্ড হাতে পাওয়ার পর গঙ্গাধর পরামানিক বলেন, অসম সরকার তার জীবনের হারিয়ে যাওয়া চারটে বছর ফিরিয়ে দিক। তিনি দাবি তোলেন, অসমের ডিটেনশন ক্যাম্পে যারা এখনও তার মতো বন্দি রয়েছে, অবিলম্বে অসম সরকার তাদের ছেড়ে দিক।
বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অলোক মুখোপাধ্যায় এনআরসি ইস্যুতে কেন্দ্র সরকারকে এক হাত নেন।
এই ঘটনায় শুরু রাজনৈতিক তরজা। রাজ্যে কর্মসংস্থান নেই। ফলে বাধ্য হয়ে বহু মানুষকে বাইরের রাজ্যে কাজের খোঁজে যেতে হয়। গঙ্গাধরও কোনওরকম আইডেন্টিটি ছাড়া বাইরের রাজ্যে কাজে গিয়েছিল, দাবি বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তির।
অন্যদিকে বাঁকুড়া জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দেবু চট্টোপাধ্য়ায় দুই দলকেই একযোগে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, এনআরসির নামে বিজেপি ঘৃণ্য রাজনীতি করছে। অন্য়দিকে, বাংলায় যদি কর্মসংস্থান থাকত, তবে তাকে অন্য রাজ্যে যেতে হত না বলে দাবি তার।
আসলে রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, বাকিটা সকলের জানা। কিন্তু যে চার চারটে বছর একজন তরুণের জীবন থেকে হারিয়ে যায়, তার দায় নেবে কে?
অতিমারী পরিস্থিতিতে দীর্ঘ প্রায় ২০ মাস পর খুলেছে স্কুল, কলেজ সহ অন্য়ান্য় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্বভাবতই খুশি পড়ুয়ারা। স্কুল খোলার আনন্দে ওদের আর ধরে রাখে কে। মোবাইলে বাজছে গান, আর সেই গানের সঙ্গে স্কুল ড্রেস পরে স্কুলে নেচে চলেছে ছাত্রীরা, আর সেই ভিডিও এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। ঘটনা বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের গড় রাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের। যদিও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সিএন পোর্টাল।
সূত্রের খবর, দিন চারেক আগে দ্বাদশ শ্রেণির চার ছাত্রী নিজেদের ক্লাসরুমে এই ভিডিওটি তৈরি করে। পরে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে নেট মাধ্যমে। শনিবার বিষয়টি নজরে আসে গড় রাইপুর হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের। এরপরই ওই চার ছাত্রীকে সোমবার স্কুলে ডেকে পাঠায় কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত চার ছাত্রীকে আপাতত স্কুলে আসতে নিষেধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। গড় রাইপুর হাইস্কুলের এই ঘটনা জানা না থাকলেও বাঁকুড়া জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর বিষয়টি নিয়ে দ্রুত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার আশ্বাস দিয়েছে। পাশাপাশি স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাইপুর ব্লকের একটি হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ৪-৫ জন ছাত্রী স্কুল ইউনিফর্ম পরেই ক্লাসরুমের মধ্যে বাংলা ও হিন্দি গানের তালে তালে নাচছে। এমন ভিডিও ভাইরাল হতেই নজর পড়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের। তড়িঘড়ি পরিচালন সমিতির বৈঠক ডাকা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে জানা যায়, ছাত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রীরা শুক্রবার ক্লাসের মধ্যে ওই ভিডিওটি তুলেছিল। পরে কোনওভাবে তা কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দিয়েছে। আর এতেই সমালোচনার ঝড় তুলেছেন নেটাগরিকরা।
বাঁকুড়া পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কবরডাঙা বস্তিতে বেশ কয়েকদিন ধরে পানীয় জল আসছে না। জল না পেয়ে এলাকার মানুষ নিজেরাই জল সরবরাহের মেন পাইপ লাইন কেটে দিলে তার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে জ্যান্ত ও মরা মাছ, সাপ। স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগেও এই ধরনের ঘটনা হয়েছিল। সেই সময় পুরসভায় জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি।
দীর্ঘদিন তাঁরা একইভাবে পানীয় জল পান করে যাচ্ছেন। জল এলেও কিছুদিন পর আবার তা বন্ধ হয়ে যায়। সেরকমই এবারও কয়েকদিন ধরে বন্ধ এলাকায় জল সরবরাহ ব্যবস্থা। ওই একই পাইপলাইনে অন্য জায়গায় পানীয় জল পৌঁছলেও, এই এলাকায় বন্ধ। জল বেরলেও সেই জলে এতই গন্ধ যে, তা খাওয়ার অযোগ্য। শনিবার স্থানীয় বাসিন্দারা মেন পাইপলাইন কাটলে দেখা যায়, তার ভিতরে জ্যান্ত ও মরা মাছ, সাপ ইত্যাদি রয়েছে পচাগলা অবস্থায়।
তাঁদের অভিযোগ, বস্তির লোক বলে কোনও দাম নেই। এই জল খেয়ে তাঁদের পেটের গোলমাল থেকে শুরু করে শরীর খারাপের বিভিন্ন উপসর্গর দেখা মিলছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।
এবিষয়ে বাঁকুড়া পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য গৌতম দাস জানান, অভিযোগ পেয়েছেন তাঁরা। জল দফতরের আধিকারিকরা পাইপলাইনগুলিতে নজর রাখছেন। মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা আর না হয়, সেই ব্যবস্থা করছেন। বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
অন্যদিকে, এলাকার বিজেপি নেতা বিবেকানন্দ পাত্রের অভিযোগ শাসকদলের বিরুদ্ধে। তিনি জানান, বেহাল এলাকায় পানীয় জল ব্যবস্থা। নেই পরিকল্পিত কোনও ব্যবস্থা। সমস্যায় সাধারণ মানুষ।
কিন্তু করার কিছুই নেই, বাধ্য হয়েই ওই গন্ধযুক্ত পানীয় জলই বাসিন্দাদের পান করতে হচ্ছে। সমস্যা কবে মেটে, সেটাই দেখার।
পাইলট প্রজেক্ট শেষে সম্পূর্ণভাবে শুরু হয়েছিল দুয়ারে রেশন। এই প্রকল্পে এবার রেশনসামগ্রী কম দেওয়ার অভিযোগ উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে। এখানকার ঘাগরা গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, কার্ড পিছু ২ কিলো করে চাল ও গম দেওয়ার কথা থাকলেও দুটি ক্ষেত্রেই যথাক্রমে ২০০ ও ৩০০ গ্রাম করে কম দেওয়া হচ্ছে। অথচ বিল দেওয়া হচ্ছে ২ কিলোরই।
স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে উপভোক্তাদের মধ্যে। রেশন দোকানের কর্মীর দাবি, রেশনসামগ্রী কম আসায় সকলকে ভাগ করে দেওয়ার জন্যই এরকম কম সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। আর এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তবে ঠিক কী ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন মহিষাদলের বিধায়ক। পাশাপাশি পালটা বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃনমূল বিধায়ক। তবে এই নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি মহিষাদলের বিডিও যোগেশচন্দ্র মন্ডলের।
রেশন দোকানের মালিক সোমনাথ প্রধান জানান, চাল-ডাল যে পরিমাণে এসেছে, তা হিসেব করে দিতে গিয়ে কম পড়ছে। সরকারের তরফ থেকেই কম আসছে। আর তার প্রমাণ স্বরূপ কাগজপত্রও তাঁরা রেখেছেন। এতে তাঁদের কোনও হাত নেই বলে জানালেন তিনি। পুরো এলাকা জুড়েই এভাবে রেশন সরবরাহ করা হচ্ছে।
এক উপভোক্তা বলেন, দুয়ারে সরকার পরিষেবা ভালো দিচ্ছে, কিন্তু পরিমাণ কেন কম দিচ্ছে, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। এর জন্য তাঁরা বিডিও বা কাউন্সিলার, যাঁর কাছে যেতে হবে যাবেন। ডিলারদের থেকে নিলে সঠিক পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু রেশন দোকানদারের থেকে কিনলে তা কমে যাচ্ছে।
বিজেপি নেতা তপনকুমার ব্যানার্জি বলেন, মমতা ব্যানার্জির সরকার দুয়ারে সরকারের প্রকল্প নিয়ে চরম দুর্নীতি করছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি প্রকল্প। নাহলে উপভোক্তাদের ২ কিলো চালের বদলে কী করে কম চাল দেয়। রেশন ডিলারদের সঙ্গে পরিকল্পনা করে নিয়েছে আগেই। রেশন দোকানদাররা নির্দেশ মতোই এই কাজ করছেন। দুয়ারে রেশন যে কত বড় ভাঁওতা, তা আরও একবার প্রমাণিত হল। উপভোক্তাদের কম দেওয়া রেশন সামগ্রী তৃণমূলের সম্মেলনের খরচে লাগবে বলে খোঁচা তাঁর।
প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয়, এখন তার অপেক্ষায় উপভোক্তারা।
অব্য়াহত বালি মাফিয়ারাজ। বাঁকুড়ার ওন্দা থানার অন্তর্গত রসিয়ারা এলাকায় দারকেশ্বর নদ থেকে বালি তুলে চলছে ব্যবসা। একদিকে চলছে বেআইনিভাবে বালি উত্তোলন, অন্য়দিকে সেই বালি ওভারলোড করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বন্ধ করার কথা বলা হলেও ওভারলোডিংয়ের অভিযোগে চাঞ্চল্য এলাকায়।
প্রশাসনের মদতেই চলছে মেঠো পথে ওভারলোডেড গাড়ি। নিজে মুখেই স্পষ্ট স্বীকারোক্তি দিলেন গাড়ির চালক। গ্রামের মেঠো রাস্তার পরোয়া না করেই চলছে এই কাজ। অভিযোগ, নিশ্চুপ প্রশাসন।
গাড়িচালকের দাবি, চালান রয়েছে তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো সিএফটির, তবে মাল রয়েছে সাড়ে পাঁচশো কিংবা সাড়ে সাতশো। কখনও কখনও আবার ৯০০ সিএফটি। এমনই দাবি গাড়ির চালকদের।
তবে অভিযোগের সত্য়তা স্বীকার করলেন না বালিঘাটের ম্যানেজার। তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো সিএফটির মাল যায় বলে দাবি তাঁর।
ওভারলোডিংয়ের ফলে রাস্তার হালও বেহাল হয়ে পড়ছে। যার ফল ভোগ করছে সাধারণ মানুষ। মেঠো রাস্তা দিয়ে ওভারলোডিংয়ের ফলে নিত্যদিন যাতায়াত করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের।
ওভারলোডিং ইস্য়ুতে শুরু রাজনৈতিক তরজা। প্রশাসন মুখে বললেও প্রকৃতপক্ষে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। গোটা বিষয় নিয়ে সরব বিষ্ণুপুর বিজেপি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তি। ওভারলোডিং বন্ধ না হলে আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি সুজিত অগস্তির।
অভিযোগ ভিত্তিহীন। ওভারলোডিংয়ের কোনও খবর নেই। অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শ্যামল সাঁতরার।
গুরুতর অভিযোগ প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এখন দেখার প্রশাসন কী ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের নির্দেশে শিশুদের অপুষ্টি দূরীকরণে নামল সারেঙ্গা ব্লক প্রশাসন। সারেঙ্গা ব্লকের ৬ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অপুষ্ট শিশুদের মায়েদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন। মায়েদের হাতে তুলে দেওয়া হল পুষ্টিকর খাবারের প্যাকেট, দেওয়া হল শিশুদের যত্ন নেওয়ার বার্তা।
কেন অপুষ্ট শিশুর জন্ম হয় বা জন্মের পর কেন অপুষ্টির শিকার হয় শিশুরা, অপুষ্টি দূরীকরণের জন্য মায়েদের কী ভূমিকা হবে বা পরিবারের ভূমিকা কী হবে এবং সরকারি ভাবে কোন পরিষেবা পাওয়া যাবে, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন সারেঙ্গা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ বিশ্বরূপ আধিকারিক, সারেঙ্গা ব্লক সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক অভিজিৎ মণ্ডল সহ উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
উল্লেখ্য, সারেঙ্গা ব্লক সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক অভিজিৎ মণ্ডলের দাবি, বিগত বছরের তুলনায় এই বছর অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। এই মূহুর্তে সারেঙ্গা ব্লকে মোট ৫৫ জন অপুষ্ট শিশু রয়েছে। তাদের দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনাই একমাত্র লক্ষ্য জেলা প্রশাসনের।
বুধবার বেশ কয়েকজনের হাতে পুষ্টিকর খাবারের প্যাকেট তুলে দেওয়া হয়েছে। গম, ছোলা, চিঁড়ে, মুড়ি, সোয়াবিন, বাদাম, মুসুর ডাল, চিনি পরিমাণ মতো দিয়ে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে ওই পুষ্টি খাবারের প্যাকেট। মূলত সারেঙ্গা ব্লক প্রশাসন, সারেঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতি, সারেঙ্গা ব্লক স্বাস্থ্য দফতর ও সারেঙ্গা সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
শহরকে দূষণমুক্ত করতে উদ্য়োগী বাঁকুড়া পৌরসভা। বুধবার পাইলট প্রজেক্টের আনুষ্ঠানিক সূচনা করলেন বাঁকুড়া পৌরসভার প্রশাসক অলোকা সেন মজুমদার। এলাকা পরিস্কার রাখতে প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকের ওপরেও খানিকটা দায় বর্তায়। অথচ সেই নাগরিকরাই এ বিষয়ে উদাসীন, অভিযোগ এমনই। বাঁকুড়া পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে দেখা যায় সাধারণ মানুষ যত্রতত্র নোংরা-আবর্জনা ফেলে রাখছেন। যার ফলে নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ। এর ফলে পথচলতি সাধারণ মানুষই যাতায়াতে চরম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
এবার তাই বাঁকুড়া পৌরসভা শহরকে দূষণমুক্ত করতে তৎপর। বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বর্জ্য় পদার্থ সংগ্রহ করবে এই পাইলট প্রজেক্টের গাড়ি। স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা গাড়ি নিয়ে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে বর্জ্য় পদার্থ সংগ্রহ করবে এবং একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সেগুলিকে রাখা হবে। বাঁকুড়া পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডে বুধবার অলোকা সেন মজুমদার বাড়িতে বাড়িতে যান এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। স্বাভাবিকভাবেই পৌরসভার এই উদ্য়োগে খুশি বাঁকুড়া পৌরবাসী।
এ বিষয়ে বাঁকুড়া পৌরসভার প্রশাসক অলোকা সেন মজুমদার জানান, দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য সরকারের এই প্রজেক্ট চলে আসছে। শুধু ভোটের স্বার্থেই নয়, সারা বছরই মানুষের পাশে থেকে কাজ করে পৌরসভা।
সামনেই পুরভোটের সম্ভাবনা। তাই পৌরসভার এই উদ্য়োগকে ভোটের রাজনীতি বলে কটাক্ষ বিজেপির। বিজেপি নেতা পার্থ কুণ্ডুর দাবি, ভোটের আগে বাড়তি অ্যাডভান্টেজ নিতে তৃণমূল কংগ্রেস এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
রাজনৈতিক চাপানউতোর চলতেই থাকবে। কিন্তু এতে কি সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন ? উঠছে প্রশ্ন। সাধারণ মানুষ কিন্তু তাকিয়ে পুর পরিষেবার দিকেই।