বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে প্রকাশ্যে বিরূপ মন্তব্য করার থেকে বিরত থাকার দাবি নিয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছেন অভিষেক। এরপরই মুখ খুললেন বিচারপতি। বুধবার কারোর নাম উল্লেখ না করেই তিনি বলেন, 'আমার কথায়-কাজে একশ্রেণী বিপদে পড়ছে।' নাম না করে ফের কাদের খোঁচা দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি, উঠছে প্রশ্ন। শহরের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে দুর্নীতি ইস্যুতেও সরব হয়েছিলেন জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়।
উপযুক্ত সময়ে সব প্রশ্নের উত্তর দেবেন তিনি, কাকে ইঙ্গিত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের, উঠছে প্রশ্ন। তিনি বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে উপযুক্ত কারণ থাকলে নিশ্চয় পদক্ষেপ করবে আদালত।' তাঁর দাবি, বিচারপতিদের বিরুদ্ধে মামলা না হওয়ার কোনও কারণ নেই। কিন্তু বিচারপতিদের গায়ে সাংবিধানিক কবচ থাকে, তাই সেই ধরনের মামলা হতে পারে না। রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি প্রশ্নেও বুধবার সরব ছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আগে এত চুরি-জোচ্চুরি দেখেছেন, প্রশ্নের সুরে খোঁচা হাইকোর্টের বিচারপতির।
শাহজাহান-কাণ্ডেও বুধবার মুখ খুলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি সন্দেশখালি-কাণ্ডে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে অবশ্য মন্তব্য করতে চাননি। বিচারপতির বিস্ফোরক মন্তব্য, ভালো কাজ যাঁরা করতে চেয়েছেন, তাঁদের টেনে নামানোর চেষ্টা হয়েছে। বিধবা বিবাহ প্রচলনের সময় বিদ্যাসাগরকে শারীরিক নিগ্রহও করা হয়েছিল, দাবি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক তথা তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বাইরে কীভাবে মন্তব্য করছেন তিনি, সেই নিয়ে অবিলম্বে শীর্ষ আদালতকে হস্তক্ষেপ করার বুধবার আবেদন জানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পাশাপাশি বিচারপতি অমৃতা সিনহার থেকে মামলা সরিয়ে নেওয়ারও আবেদন শীর্ষ আদালতে করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রতি একাধিকবার সংবাদমাধ্যমের সামনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে বিস্ফোরক কিছু মন্তব্য করেছেন। কয়েকদিন আগেই অভিষেককে তাঁর বিপুল সম্পত্তির হিসেব প্রকাশ্যে আনার জন্য চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। এরপরই আজ অর্থাৎ বুধবার সুপ্রিম কোর্টে নতুন মামলা করেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। আবেদনে তিনি জানিয়েছেন, বিচারাধীন বিষয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখে লাগাম টানার নির্দেশ দেওয়া হোক। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য থেকে বিচারপতিকে বিরত থাকার আবেদন জানিয়েছেন। বিচারাধীন বিষয়ে হাইকোর্টের কোনও বিচারপতি যেন একতরফা মন্তব্য না করেন, সেই বিষয়েও আবেদন জানিয়েছেন অভিষেক। আবার তিনি প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার জন্য নতুন বিশেষ বেঞ্চ গঠনের আবেদনও জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের কাছে। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নির্দেশ দেওয়া হোক বলে দাবি অভিষেকের।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তি প্রসঙ্গে এবারে সরব বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার বিচারপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তি নিয়েচ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বিচারপতি।
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। এদিন কুণালের সেই চিঠি প্রসঙ্গে কুণালকে নিজের এজলাস থেকে পাল্টা জবাব দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানালেন, এসব করে তো আর চুরি আটকানো যাবে না। আর এই প্রসঙ্গেই উঠে আসে অভিষেকের সম্পত্তির প্রসঙ্গও। সম্পত্তির হিসেব নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি মন্তব্য করেন, 'একের পর এক কোটি কোটি টাকা খরচ করে মামলা হয়, এই মামলার খরচ কে বহন করে তা জানাতে হবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত সম্পত্তি কোথা থেকে আসে? যদি হলফনামা দিয়ে জানান তাহলে বাকি নেতা মিনাক্ষীর মতো তাদের বলব আপনারাও সম্পত্তির কথা জানান। উনি কি পারবেন? মনে হয় না পারবেন? রাজ্য দুর্নীতি ঢাকতে কত টাকা খরচ করছে। এরপর অফিসিয়ালি জানতে চাইব। বিভিন্ন স্তরের লোকেরা জেলে তাই আমার উপর রাগ। বিচারপতি অমৃতা সিনহার স্বামীর কন্ঠস্বরের পরীক্ষা কেন? তিনি তো আসামী নন। একটা হাসপাতাল ব্যবহার করল। কী চলছে আমরা সবাই বুঝতে পারছি। দেখি কদিন হয়। দুর্নীতি করে টাকা রাখতে চাই এরপর এই ধরণের মামলা করবে।'
বিচারপতি আরও বলেন, 'সুদীপ রাহাকে আমি চিনি না সুতরাং তার বক্তব্যের কোনও মতামত আমি দেব না। সুদীপ রাহার নাম শুনিনি। আমায় সন্ত্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। অনেক কাজ করতে পারে। আমার মনে হয় একদল চোর এবার হয়ত সুপ্রিম কোর্টে মামলা করবে আমাদের সম্পত্তি চুরি করে করা। বন্ধ হলে অসুবিধা হবে তাই অবাধে চুরি করার অনুমতি চেয়ে মামলা করবে। যার যেখানে অভিযোগ করার করুক, আমি ন্যায়ের পথেই চলবো।'
রাজ্য ঘটা একাধিক ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা গিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে। এবারে তাঁরই মুখে শোনা গেল তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের প্রশংসা। বিচারপতিকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'কুণাল ঘোষের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। উনি মানুষটা ভাল।'
সোমবার বেশ কয়েকটি মামলার শুনানি চলছে। আর সেসময়ই এজলাসে বসেই শাসক দল তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের প্রশংসা করলেন বিচারপতি। কুণাল ঘোষের সঙ্গে সাক্ষাতের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করলেন। কুণাল ঘোষ সম্পর্কে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'কুণাল ঘোষের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। উনি মানুষটা ভাল। অনেকক্ষণ কথা হয়েছে। উনি একদিন আমার চেম্বারে এসেছিলেন। কথা বলে ভাল লেগেছে। ওনার সঙ্গে আমার এখন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। ওনার উপন্যাসের কয়েকটা বই দিয়েছেন। আমি পড়ছি, ভালোই লিখেছেন।
কুণাল ঘোষ যে তাঁকে নিশানা করে কটূক্তিও করেছেন, সে কথাও বলেছেন বিচারপতি। তিনি বলেন, 'উনি আমায় গালাগালি করেন। তাতে অসুবিধা নেই। উনি ওনার জায়গা থেকে ওনার কথা বলেন। কালকেও বলেছেন, আমায় টুল নিয়ে বাইরে বসতে। ওতে আমি কিছুই মনে করি না। আমার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।' তিনি আরও বলেন, 'কল্যাণ ব্যানার্জিও আমায় পদত্যাগ করতে বলেছেন। ভেবেছিলাম আজ হয়তো সকালে এসে বলবেন তুমি পদত্যাগ কর। তবে উনি আমায় খুব ভালবাসেন আমিও ওনাকে খুব শ্রদ্ধা করি। আমিও কি সব সময় নিয়ন্ত্রণ রেখা মেনে চলি।'
প্রাথমিকের নিয়োগ মামলায় বড় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রাথমিকের ৪২ হাজার ৯৪৯ প্রার্থীর প্যানেল প্রকাশ করতে হবে পর্ষদকে। বুধবার প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই শুনানি শেষে এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
২০১৬ সালের প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত মামলার বুধবার শুনানি ছিল হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চে। সেখানে আজ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, ৪২ হাজার ৯৪৯ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। যদি প্যানেল আগেই প্রকাশ হয়ে থাকে, তাহলে সেই প্যানেলের হার্ড কপি ও সফ্ট কপি উভয়ই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১৫ জানুয়ারি। ওই দিনই পর্ষদকে আদালতে প্যানেলের হার্ড কপি জমা দিতে হবে।
২০১৪ র টেটের প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে যে নিয়োগ প্রক্রিয়া হয় তার মাধ্যমে প্রায় ৪২৫০০ শিক্ষক নিয়োগ হয়। মামলায় অভিযোগ ওঠে যে সংরক্ষণ নীতি না মেনেই নিয়োগ হয়েছিল। এই মামলার প্রেক্ষিতেই অভিযোগ ওঠে যে অ্যাপটিচিউড টেস্ট না নিয়েই ইচ্ছামত নম্বর দেওয়া হয়েছে এবং ইন্টারভিউ নিয়ম মেনে হয়নি। কারও ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নীতি না মেনে নিয়োগ হয়েছে। এই মামলাতেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ইন্টারভিউয়ার অর্থাৎ যারা ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপর ৩৬ হাজার চাকরি প্রার্থীদের চাকরি বাতিল করেন তিনি।
২০১৪ সালে টেট পরীক্ষার মাধ্যমে ২০১৬ এবং ২০২০ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ হয়। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী গত ১২ ডিসেম্বর হলফনামা জমা দেয় পর্ষদ। জানানো হয়, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্যানেল প্রকাশ করা হয়। তবে সে যুক্তি খারিজ করে দেন বিচারপতি সিনহা। দুটি নিয়োগ প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ প্যানেল প্রকাশের কথা বলেন। পর্ষদের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। এরপর বুধবার ওই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদকে নির্দেশ দেয়, আগামী ১০ দিনের মধ্যে ৪২ হাজার ৯৪৯ জন শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল প্রকাশ করতে হবে। আগামী ১৫ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।
নিয়োগের দাবিতে এতদিন চাকরিপ্রার্থীদের রাস্তায় বিক্ষোভ করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু বুধবার দেখা গেল এক অন্য দৃশ্য। এবারে ২০১৬-এর এসএলএসটি শারীর শিক্ষা কর্মশিক্ষা চাকরিপ্রার্থীরা পৌঁছে গেলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির বাড়িতে। হাতে পোস্টার নিয়ে বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়লেন চাকরিপ্রার্থীরা। পোস্টারে লেখা, 'আমরা ভগবানের দর্শনে এসেছি। ভগবান আমাদের উদ্ধার করুন।' তাঁদের দেখে বিচারপতিও অবশেষে তাঁদের সঙ্গে দেখা করলেন ও পরামর্শ দিলেন।
জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে নভেম্বর মাসে সুপারিশপত্র পেয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু সুপার নিউমেরারি পোস্ট ঘিরে আইনি জটিলতা থাকায় চাকরিতে যোগ দিতে পারছেন না তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, সরকার তাঁদের নিয়োগ আটকে রেখেছে। সেই কারণেই এদিন বিচারপতির দ্বারস্থ হন তাঁরা। বিচারপতিও তাঁদের দেখতে নীচে নেমে আসেন। তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন ও পরামর্শও দেন। বিচারপতি তাঁদের রাস্তায় বিক্ষোভ না দেখিয়ে আদালতে আসার পরামর্শ দেন।
চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, সোমা দাস চাকরি পেয়েছেন। আর তা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সুপারিশেই। তাদের চাকরিটাও যাতে হয় সে বিষয়ে বিচারপতিকে আবেদন জানান। আর তা শুনেই চাকরিপ্রার্থীদের স্পষ্ট বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, সোমা দাসের চাকরির ব্যবস্থা করেননি। সুপারিশ করেছিলেন। অন্যদিকে ১০০০ দিন ধরে চাকরি প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন, 'আমিও সমব্যথিত। চাই সবাই চাকরি পান। কিন্তু বসে থেকে কোনও লাভ হবে না। যোগ্য হলে কেন আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন না?'
'যেখান থেকে পারুন হাজির করুন, নেতাজি ইন্দোরে খুজুন আজ, পাবেন তাঁকে।' হাওড়ার এক বেআইনি নির্মাণ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার প্রোমোটারকে হাজিরার নির্দেশ দেয় জাস্টিস গাঙ্গুলি। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন জাস্টিস গাঙ্গুলি। বৃহস্পতিবার জাস্টিস গাঙ্গুলি পুলিশকে নির্দেশ দেয় পুলিশ যেন অভিযুক্ত ওই প্রোমোটার পার্থ ঘোষকে বেলা ৩ টের মধ্যে আদালতে এনে হাজির করে। এরপরেই তিনি আরও বলেন, 'একটাও বেআইনি নির্মাণ কোথাও থাকবে না। হাওড়ায় আমার নিজের বাড়ি আছে সেটাও যদি বেআইনি হয় তাহলে সেটাও বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিতে হবে।'
সম্প্রতি, হাওড়ার লিলুয়ায় বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেবার নির্দেশ ছিল কলকাতা হাইকোর্টের। অভিযোগ নির্দেশ কার্যকর করেনি বালি পৌরসভা, সেকারণেই ফের কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে আবেদন করে মামলাকারী সন্ধ্যা ঘোষ। সেই মামলার শুনানিতেই আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সাড়ে তিনটের সময় ওই প্রোমোটারকে হাজিরার নির্দেশ দেন জাস্টিস গাঙ্গুলি।
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বহুবার সরব হয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।এবার বেআইনি নির্মাণে মামলায় সরব তিনি ।বৃহস্পতিবার একটি বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত মামলায় বেআইনি নির্মাণ নিয়ে সরব বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এ দিন তিনি পুলিশকে নির্দেশ দেন যে, অভিযুক্ত প্রোমোটারকে যেন নেতাজি ইনডোরে গিয়ে খোঁজে পুলিশ। বিচারপতির এমন মন্তব্যের পরই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রসঙ্গত আজ নেতাজি ইনডোরে তৃণমূলের মেগা সভা রয়েছে, তৃণমূলের রাজ্য স্তরের নেতাদের নিয়ে। সেখানে অভিযুক্ত প্রোমোটারকে খুঁজতে বলায় আপাতত তৃণমূলকেই ইশারা করছেন জাস্টিস গাঙ্গুলি এমনটাই ধারণা অভিজ্ঞ মহলের। পাশাপাশি এদিন তিনি তৃণমলের পাশাপাশি পুলিশকে টার্গেট করে বলেন, 'পুলিশ প্রোমোটারের দালালের কাজ করছে।'
শুভেন্দু অধিকারীর দাদা কৃষ্ণেন্দু অধিকারীকে পুলিস যে নোটিস পাঠিয়েছিল, তা খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার পুলিসের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এগরার এসডিপিও-কে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানাও করেন বিচারপতি।
উল্লেখ্য, মেচেদা-দীঘা বাইপাসে বাতিস্তম্ভ লাগানোয় দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় সাক্ষী হিসেবে ১৬০ ধারায় নোটিস পাঠানো হয় রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাদা কৃষ্ণেন্দু অধিকারীকে। পাশাপাশি, ১০ বছরের আয়করের ফাইল চেয়ে পাঠানো হয় তাঁর কাছে। এ নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কৃষ্ণেন্দু।
বুধবার এই মামলার শুনানিতে আবেদনকারীর আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার জানান, ২০১৭ সালে প্রাতঃভ্রমণ করতে গিয়ে পল্লব দত্ত দেখেন, মেচেদা-দীঘা বাইপাসে কিছু আলো লাগানো হচ্ছে। কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। সঙ্গে সঙ্গে সেটা এফআইআর হিসাবে গণ্য করে পুলিস। আমার মক্কেলের পরিবার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের এবং আমার মক্কেলের ভাই কাঁথি পুরসভার চেয়ারপার্সন ছিলেন। সেই মামলাতেই সাক্ষী হিসাবে আমার মক্কেলকে ১৬০-এর নোটিস দেওয়া হয়েছে। তাঁর আয়করের হিসেব চাইছে গত ১০ বছরের। এটা ৩ দিনে কীভাবে দিতে সক্ষম হব? অন্তত ১৫ দিন সময় লাগবে। আর কী কারণে আয়করের হিসেবের প্রয়োজন? আমার মক্কেলের ভাইদের নামে একাধিক মামলা দেওয়া হয়েছে। তাঁর ভাই বিরোধী দলনেতা। তাঁর বিরুদ্ধ ৪৩টি মামলা।
রাজ্যের আইনজীবী তপন মুখোপাধ্যায় জানান, এফআইআর হয়েছে, তার তদন্ত চলছে। এটা দুর্নীতির অভিযোগের মামলা। সাক্ষীকে ডাকা হয়ছে তদন্তের স্বার্থে। এরপরেই বিচারপতির চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়ে পুলিস। তাঁর মন্তব্য, মেরুদণ্ডহীন পুলিস আদালতকে জানাতে ব্যর্থ, কেন তারা আইটি ফাইল চাইল, আর কী কারণে এফআইআর রুজু হল। তাই পুলিসকে কড়া নির্দেশ, এই কাজ যেন দ্বিতীয়বার না হয়। এসডিপিও-কে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানারও নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বিচারপতি জানান, একজন মানুষকে হেনস্থা করার জন্য পুলিস ১৬০-এর নোটিস পাঠিয়েছে। এটা একজন সাক্ষীকে হয়রানি ছাড়া আর কিছুই না। সাক্ষী হিসেবে ডেকে তার আইটি ফাইল চাওয়া কোন আইনে আছে? আপনি হুইল চেয়ারে ঘুরতে পারেন, হেলিকপ্টারে চড়তে পারেন। তাই বলে আইন অনুযায়ী সাক্ষীর আইটি ফাইল চাইতে পারেন না। তাকে হয়রান করতে পারেন না।
সমবায় দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। একইসঙ্গে রাজ্যকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ বিচারপতির। উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট আলিপুরদুয়ার মহিলা ঋণদান সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে অন্তত ৫০ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে একযোগে সিবিআই এবং ইডিকে তদন্তে নামার নির্দেশ দেন বিচারপতি। ২৫ অগাস্ট থেকেই তদন্ত শুরু করে ১২ অক্টোবরের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেন তিনি। কিন্তু এতদিনেও নথি হস্তান্তর করেনি সিআইডি। আর তাতেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি।
শুক্রবার রাজ্য সিআইডি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে এই নির্দেশের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায়। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই আর্থিক দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কার্যকর হয়নি। মামলার নথি সিআইডি হস্তান্তর করেনি সিবিআই-কে। উল্টে আগের নির্দেশের পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছে সিআইডি। চরম বিরক্ত বিচারপতি রাজ্যকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। আগামী দু'সপ্তাহের মধ্যে এই অর্থ হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা করতে হবে বলে জানান তিনি। ক্ষুব্ধ বিচারপতির মন্তব্য, 'গরীবের টাকা মেরে আপনারা ছেলেখেলা করছেন? কারা এই টাকা নিয়েছে, সিআইডি এতদিনেও জানে না। কিন্তু আমি জানি।' একইসঙ্গে তাঁর নির্দেশ, সিআইডি-র থেকে সিবিআই-এর হাতে তদন্তভার আগামী ৩ দিনের মধ্যে তুলে দিতে হবে। পরের ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত শুরু করবে সিবিআই। তদন্ত করবে ইডিও। যদি নির্দেশ কার্যকর না হয়, তাহলে স্বরাষ্ট্র সচিবকে তলব করা হবে। হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকেও নির্দেশ কার্যকরী করার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
প্রকাশ্যে এল নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর নামের তালিকা। যা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক সব মহলেই। কলকাতা হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে জাস্টিস গাঙ্গুলি ওই কারচুপি করা শিক্ষকদের নামের তালিকা প্রকাশ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। এবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক হিসেবে চাকরি করা ৯০৭ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করল স্কুল সার্ভিস কমিশন।
অভিযোগ, এই শিক্ষকদের চাকরির পরীক্ষায় ওএমআর শিটে কারচুপি করা হয়েছিল। যা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে এক মামলার শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, নামের তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে নির্দেশ ছিল ওই শিক্ষকদের উত্তরপত্রও প্রকাশ করতে হবে এমনই নির্দেশ।ছিল জাস্টিস গাঙ্গুলির। যদিও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের উত্তরপত্র প্রকাশের নির্দেশের উপরে মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই বুধবার কমিশনের তরফে ওই ৯০৭ জনের নাম ও রোল নম্বর প্রকাশ হল।
৩২ হাজার প্রাথমিক চাকরি বাতিলের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ (suspension) দিল সুপ্রিমকোর্ট (Supreme Court)। শুক্রবার শীর্ষ আদালত ওই নির্দেশ দিয়েছে। কয়েকমাস আগে ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে।
নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে প্রথমে ৩৬ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ পরে বদল করে ৩২ হাজার করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি চার মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেছিলেন চাকরিহারাদের একাংশ। সেখানে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে কিছুটা পরিবর্তন করা হয়। ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানানো হয়, ওই ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষককে পার্শ্বশিক্ষক হিসাবে কাজ করতে হবে না। তাঁরা যেমন নিযুক্ত ছিলেন তেমনই থাকবেন। তবে পর্ষদকে নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
এর পর হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ। সেখানে বিচারপতি জে কে মহেশ্বরী এবং কে ভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করে দেয়।
এবার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Ganguly) রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ প্রাথমিক চাকরিচ্যুতরা। প্রাথমিকে নিয়োগ বাতিল মামলায় হাই কোর্টের (High Court) সিঙ্গল বেঞ্চ ও ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ শিক্ষকরা।
সূত্রের খবর, পূর্বে হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আপাতত তাঁরা ৪ মাস স্কুলে যেতে পারবেন। পার্শ্ব শিক্ষকদের বেতনকাঠামো অনুযায়ী বেতনও পাবেন। পরে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেন। চাকরি বাতিল না হলেও নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে বলা হয় তাঁদের। পর্ষদকে নির্দেশ দেওয়া হয়, অগস্টের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলতে হবে। এর মধ্যেই হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে শিক্ষকরা।
২০১৬ সালে প্রাথমিকে নিয়োগ হয়েছিল মোট ৪২,৫০০ জন। এর মধ্যে ৬,৫০০ জনকে নিয়ে বিতর্ক নেই। কিন্তু বিচারপতি জানান, ৩০ হাজার ১৮৫ জন প্রশিক্ষণ না নিয়েই চাকরি পেয়েছেন। ইন্টারভিউ না নেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। এই মামলায় চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এখনই চাকরি হারাচ্ছেন না ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক (Primary Teacher)। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Ganguly) সিদ্ধান্তে অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ (Division Bench)। বৃহস্পতিবার জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয় ওই শিক্ষকরা আপাতত পার্শ্বশিক্ষক হারে নয়, বেতন পাবেন পূর্ণ শিক্ষক হারেই।
সম্প্রতি ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের একটি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ৩৬ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয়। অভিযোগ ছিল ওই নিয়োগের সময় চাকরিপ্রার্থীদের নিয়ম মেনে টেস্ট নেওয়া হয়নি এবং নিয়োগের সময় চাকরি প্রার্থীরা ট্রেইন্ড ছিল না। যদিও এই মামলার রায় নিয়ে ধোঁয়াশা ছিলই। এরপরে কিছু আক্ষরিক ও টাইপিং সমস্যার জন্য ৪ হাজার শিক্ষক রেহাই পায়। বাতিল হয় ৩২ হাজার চাকরি। এরপরেই এই রায়ের বিরুদ্ধে মমতা বন্দোপাধ্যায় চাকরি হারাদের পক্ষ নেয়। জানান, সরকার পক্ষে আছে তাঁদের। পাশাপাশি এই রায় নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যাওয়ার ঘোষণা করে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল।
সেইমত পর্ষদ ও চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা জোড়া মামলা দায়ের করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। ওই মামলার শুনানিতে সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় এবং জানিয়ে দেয় ২৩শে সেপ্টেম্বর অবধি চাকরি বাতিলের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ থাকবে। তাঁরা শিক্ষকের হারেই বেতন পাবেন।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি (Justice) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Ganguly) নির্দেশে মঙ্গলবার স্কুলশিক্ষিকার চাকরি হারিয়েছেন শিলিগুড়ির ববিতা সরকার (Babita Sarkar)। সেই চাকরি দেওয়া হয়েছে অনামিকা রায় নামে এক পরীক্ষার্থীকে। এবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হলেন ববিতা।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর, ববিতার আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপরই ববিতাকে মামলা দায়েরের অনুমতি দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
মঙ্গলবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ববিতার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। এবং ঐ এখনও অবধি প্রাপ্ত টাকা হাইকোর্টকে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এবং ওই টাকা দুই ধাপে দিতে হবে বলে জানান তিনি। যদিও এই নির্দেশের পর ববিতা জানিয়েছিল পুরোটা টাকা এখনই দেওয়া সম্ভব নয়। যদিও বৃহস্পতিবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে ববিতা।
সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে চাকরিহারাদের নিয়ে মন্তব্য করলেও, বিচারপতি (Justice) গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly) নিয়ে নীরবই থাকলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল নিয়ে এই প্রথম প্রকাশ্যে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং বুঝিয়ে দিলেন চাকরি হারাদের পাশে সরকার রয়েছে।
সোমবার নবান্নে মমতা চাকরিচ্যুত দের আশ্বাস দেন। ভরসা রাখতে বলেন তিনি। তিনি বলেছেন, 'কোর্ট করতেই পারে। একই সঙ্গে চাকরিহারাদের হতাশা নিয়েও তিনি যে চিন্তিত, কেউ যে 'কিছু ঘটিয়ে ফেলতে' পারেন, এমন উদ্বেগের কথাও গোপন রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী।'এই ৩৬ হাজার চাকরি বাতিলের প্রভাব সরকারের অন্যান্য বিভাগের নিয়োগেও পড়ছে বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'এমনিতে অনেক নিয়োগ বাকি। এ সব ঘটনার জন্য সেই নিয়োগ করতে সমস্যা হচ্ছে। সব মিলিয়ে চার-পাঁচ লক্ষ নিয়োগ পড়ে রয়েছে। বিভিন্ন বিভাগে।' তবে মুখ্যমন্ত্রী এও জানিয়েছেন, এ সবের জন্য আদালতকে কোনও ভাবেই দায়ী করছেন না তিনি।
তাঁর কথায়, 'কোর্টকে দায়ী করছি না। কোর্ট করতে পারে। আমি স্বাগত জানাই কোর্টের রায়কে। সে আমার বিরুদ্ধে হোক বা পক্ষে।' এর পরেই এই চাকরি বাতিলের জন্য ডিএ আন্দোলনকারীদেরও দিকেও আঙুল তুলেছে মমতা। বলেন, 'যাঁরা ডিএ নিয়ে চিৎকার করেন, রোজ মিছিল করছেন, তাঁদের জন্য ৩৬ হাজার চাকরি হারিয়েছেন। ২ লক্ষ পরিবার বেকার। তাঁদের কথা কেউ মন দিয়ে ভাবে না। খারাপ লাগছে। এগুলো নিয়ে কেউ ভাবে না।'
নবান্ন যে এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'কোর্টে আবেদন জানাব। আমাদের আইনজীবীরা পয়েন্টগুলি বলবেন, আমি এখন বলব না। কেউ দাবি করে ওঁরা প্রশিক্ষণ নেননি। তা ঠিক নয়। ওঁরা প্রশিক্ষণ নেন ৩ বছরের। যেহেতু এটা কোর্টে যাবে, আমি কথা বলতে চাই না।' চাকরি হারানো শিক্ষকদের মন শক্ত রাখার পরামর্শ দিয়ে মমতা বলেন, 'আবেদন করব, অবসাদে ভুগবেন না, মানসিক ভারসাম্য হারাবেন না, মন খারাপ করবেন না। আমাদের সরকার সব সময় মানবিক। যে কোনও মানুষের বিপদে-আপদে, দুর্দিনে, সুদিনে পাশে থাকে।'