
ইদানিং ভারতীয় চলচিত্রে জীবনধর্মী ছবি তৈরি হচ্ছে বেশ কয়েক বছর ধরে। বায়োপিক বা বর্তমান সময়ের বিখ্যাতদের নিয়ে ছবি তৈরির ঝড় অবশ্য শুরু হয়েছে কয়েক বছর ধরে। আগে মুম্বইতে আকবর বা নেতাজি বা গান্ধীজিকে নিয়ে ছবি হয়েছিল। মনে রাখতে হবে এদের জীবদ্দশায় কিন্তু কোনও ছবিই তৈরি হতো না। এর সঙ্গে আকবরের বা জাহাঙ্গীরের অথবা মঙ্গল পাণ্ডের চেহারা কেমন ছিল তার সঠিক হদিশ কেউ রাখে না। ফলে যে কোনও শিল্পী এসব চরিত্র করে বিখ্যাত হয়েছেন বা বিখ্যাত শিল্পীদের দিয়ে এই চরিত্র করানো হয়েছিল।
এ রাজ্যেও রাজা রামমোহন, বিদ্যাসাগর, নেতাজি নিয়ে জীবনধর্মী সিনেমা তৈরি হয়েছে। বাস্তব সত্যি হচ্ছে সেই ছবি দর্শক গ্রহণ করলেও বাস্তব জীবনীর অনেক কিছুই দেখানোর সাহস করেনি পরিচালকরা। একমাত্র রবীন্দ্রনাথ নিয়ে তথ্যচিত্র, যা বানিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়, তা সঠিক তথ্য নিয়েই করা হয়েছিল।
বায়োপিকের ছবি শুরু হয়েছে বছর পাঁচেক ধরে বা সামান্য আগে। মূলত হিন্দিতেই এই বায়োপিক তৈরি হয়েছে। সঞ্জয় দত্তকে নিয়ে যে ছবি হয়েছিল সঞ্জু, তা সঞ্জয়ের কাছ থেকে তথ্য নিয়েই। পরবর্তীতে দারুন ছবি হয়েছিল ধোনির জীবনী নিয়ে যেখানে ধোনির সঙ্গে কথা বলেই চিত্রনাট্য লেখা হয়েছিল ফলে বাস্তব ধর্মী হয়েছিল ছবিটি।
মাঝখানে উত্তমকুমার নিয়ে একটি বায়োপিকের মতো বাংলা ধারাবাহিক তৈরি হয়েছিল, যা দেখে প্রাক্তন শিল্পিরাই আপত্তি তুলেছিলেন। সৃজিত মুখোপাধ্যায় নেতাজি নিয়ে যে ছবি হয়েছিল তা নিয়েও বিতর্ক হয়েছিল। একটি ছবি সম্প্রতি হয়েছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে, যেখানে সৌমিত্রবাবু নিজেও অংশ নিয়েছিলেন।
এবারে মুক্তি পেলো সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে 'অপরাজিত' যে ছবিকে ঠিক বায়োপিক বলা যাবে না কিন্তু সত্যজিতের জীবনী নিয়েই এই ছবি হয়েছে। এই ছবিতে সত্যজিতের চরিত্রের নাম অপরাজিত রায়। সত্যজিতের পুত্র সন্দীপ নাকি ছবি দেখে মুগ্ধ। অপরাজিতর চরিত্রে অভিনয় করেছেন জিতু কমাল নামে এক ছোট পর্দার অভিনেতা। পরিচালক অনীক দত্ত ভালো ছবি করিয়ে। তাঁর 'ভূতের ভবিষ্যৎ' বাংলা ছবি সাম্প্রতিক সময়ে ব্লক বাস্টার। বামপন্থী অনীক সবই চমৎকার করেন কিন্তু দক্ষিপন্থীদের একটু খোঁচা না দিয়ে থাকেন না।এই ছবিতেও ব্যতিক্রম হয়নি। প্রয়াত বিধান রায়ের নাম এই ছবিতে বিমান রায়, চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই চরিত্রটা খানিকটা খেলো লেগেছে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কোথাও যেন মনে হয়েছে ব্যক্তিত্বের অভাব।