
উত্তমকুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় থেকে তাবড় শিল্পীদের (Artist) বেশিরভাগই সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) ছবিতে কাজ পেয়েছিলেন। অন্যদিকে শর্মিলা ঠাকুর, অপর্ণা সেন থেকে টলিউডের বহু অভিনেত্রী সুযোগ পেয়েছিলেন তাঁদের মানিকদার ছবিতে কাজ করার। কিন্তু সুযোগ না পাওয়ার সংখ্যাটিও নেহাত কম নয়।
প্রথমেই বলতে হয় প্রয়াত সুচিত্রা সেনের (Suchitra Sen) কথা। কেন সুযোগ পাননি, প্রশ্নের উত্তরে বহু বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, সুচিত্রা বাংলা সিনেমা জগতের প্রথম এবং গ্ল্যামারাস অভিনেত্রী হিসাবে আজও সেরা। কিন্তু মানিকদা এমন কোনও ছবি কি করেছেন যেখানে সুচিত্রাকে দরকার। শোনা যায়, একবার সত্যজিৎ সুচিত্রাকে নিয়ে ছবি করবেন ঠিক করেছিলেন, সম্ভবত দেবী চৌধুরানী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর হয়নি।
শুধু সুচিত্রা নয়। সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, ছায়া দেবী, সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়, মহুয়া রায়চৌধুরী, দেবশ্রী রায়--এমন অনেককেই তাঁর ছবিতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে বিশ্বজিৎ, বসন্ত চৌধুরী, অনুপকুমার, তরুণকুমার, অসিতবরণ, বিকাশ রায়, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ইত্যাদি সু-অভিনেতারাও সুযোগ পাননি। এখানেও প্রশ্ন, এঁরা কেন সুযোগ (Scope) পেলেন না? প্রশ্ন তুলেছিলেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। দুটি এমন ছবিতে সাবিত্রীর সুযোগ থাকতেই পারত, যেমন জনঅরণ্য, শাখাপ্রশাখাতে। এই দুই ছবিতে স্নেহশীলা বৌদির চরিত্র ছিল। কিন্তু দুটি ছবিতেই সুযোগ পেয়েছেন লিলি চক্রবর্তী। কারণ জানা গিয়েছে, দুটি ছবির ওই বৌদি চরিত্রে কোথাও একটা বুদ্ধিমতী ব্যাক্তিত্বর দরকার ছিল, যা কিনা সাবিত্রীর মধ্যে হয়তো সত্যজিৎ পাননি।
বাকি অভিনেতা-অভিনেত্রী সম্বন্ধে সত্যজিতের ধারণা, এঁদের কিছু না কিছু ম্যানারিজম ছিল, যার থেকে এঁরা বেরোতে পারেননি। সেদিক থেকে ভানুর চিরদিনের সঙ্গী জহর রায়কে সত্যজিতের পছন্দ ছিল। ছবি বিশ্বাসের নিজস্ব ধারার অভিনয় থাকলেও তাঁকে সত্যজিৎ পাখি পড়ানোর মতো অভিনয় দেখিয়ে গিয়েছিলেন। সৌমিত্রর পরে যাঁরা তাঁর ছবিতে সুযোগ পেয়েছেন, তাঁরা রবি ঘোষ, কামু মুখার্জি, প্রসাদ সিংহ, সন্তোষ দত্ত প্রমুখ।