
প্রসূন গুপ্ত: সব্যসাচী চক্রবর্তী, এমন এক চরিত্র বা অভিনেতাও বলা উচিত, যাকে মানুষ প্রথমে চেনে ছোট পর্দার গোরা হিসেবে। তারপর চেনে বড়পর্দার 'ফেলুদা' হিসেবে। অভিনয়ে আসার কথাই ছিল না তাঁর। যদিও পরিবারের একটি অংশ থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিল, কাজেই একপ্রকার নাট্যজগতে আসাটা ব্যতিক্রমী কিছু না। উচ্চশিক্ষিত পরিবারের ছেলে, নিজেরও পড়াশোনা প্রচুর। তাঁর কথায়, 'বাবাকে দেখেই নাকি উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন।' কিছুদিন আগে গিয়েছিলেন বাংলাদেশে। সেখানেই নানা প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, 'আর সিনেমা করবেন না।' কিন্তু কেন এমন ইচ্ছা? সব্যসাচী জানান, 'তাঁকে নাকি আর মানায় না।' কিন্তু মানাচ্ছিলো তো দিব্বি। বাবার চরিত্র থেকে দাদুর চরিত্রে অভিনয় পর্যন্ত করেছেন। শুধু এ রাজ্যেই নয়, বলিউড এবং ওপার বাংলার ছবিতেও অভিনয় করেছেন।
খাকি ছবিতে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে এক রাজনৈতিক নেতার ভূমিকা তো ভোলার নয়। ভোলার নয় 'দিল সে'-র চরিত্র। বাংলাদেশ মিডিয়ার কাছে বাংলা চলচ্চিত্রের বেণু দা জানিয়েছেন, 'তিনি নাকি মিস্ত্রি হতে চেয়েছিলেন।' মজা মনে হতে পারে কিন্তু যুক্তি দিয়ে বুঝিয়েছিলেন, যে মেশিন নিয়ে কাজ তাঁর নাকি চিরকালের পছন্দ।
তাঁর পিসেমশাই প্রয়াত জোছন দস্তিদার ছিলেন নাটকের অন্যতম ব্যক্তিত্ব। জোছনবাবু প্রথম দূরদর্শন বাংলায় শুরু করেছিলেন ধারাবাহিক 'তেরো পার্বন'। সব্যসাচীর ইচ্ছা ছিল টেকনিক্যাল কাজে যোগ দেবেন। তাঁর প্রিয় কাজ ক্যামেরার পিছনে থাকা। দারুণ ছবিও তোলেন সব্যসাচী চক্রবর্তী। কিন্তু তাঁকেই জোর দেওয়া হয়েছিল অভিনয়ের জন্য। এরপর আর বোধহয় পিছনে তাকাতে হয়নি। তবে সব্যসাচী তথাকথিত নায়ক চরিত্রে অভিনয় করতেন না। পার্শ্বচরিত্রই তাঁর প্রিয় ছিল। এছাড়া নাটক তো ছিলই। তবে যাই হোক না কেন সব্যসাচীর অভিনয়ের মাইলস্টোন ফেলুদা চরিত্র।
তিনি জানান, 'ফেলুদা চরিত্রে আমাকে আর মানায় না। ফেলু দা-র চরিত্রে তাঁর দেখা সেরা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি আর সিনেমায় নেই।' কী করবেন ভবিষ্যতে, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়বো। নতুন জীবন!'