Share this link via
Or copy link
"আমি বাঁচতে চাই"। হাত জোড় করে রাজ্য সরকারের কাছে কাতর আর্জি কিডনি রোগে আক্রান্ত হরিদাসপুরের গণেশ মণ্ডলের।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক ব্লকের হরিদাসপুরের টুল্যা গ্রামের ৪০ বছর বয়সী গণেশ মণ্ডল। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছেন। তাঁর দুটো কিডনিই নষ্ট। যার ফলে দীর্ঘ বছর ধরে চিকিৎসার মাধ্যমে বাঁচার কঠিন লড়াইটা তিনি চালিয়ে গেলেও বাধ সাধে আর্থিক সমস্যা।
বাড়িতে থাকা অবস্থায় নাক-মুখ দিয়ে রক্ত উঠতে শুরু করলে তৎক্ষণাৎ তাঁকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই টানা এগারো দিন চিকিৎসা চলাকালীন জানতে পারেন, গণেশবাবু আইটিপি রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। যার চিকিৎসা খরচ লক্ষ লক্ষ টাকা। তাঁকে যে ইঞ্জেকশন দিতে হয়, যার এক একটার মূল্য প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
তবে সেই ইঞ্জেকশন-এর সাপ্লাই নীলরতন হাসপাতালে না থাকায় গণেশ মণ্ডলকে স্বেচ্ছায় বাড়ি চলে যেতে বলেছিল হাসপাতালের তরফ থেকে। যার ফলে নিরুপায় হয়ে বাড়ি ফিরতে হয় আইটিপি রোগে আক্রান্ত অসুস্থ তমলুকের গণেশ মণ্ডলকে। তাঁর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও ওই ইঞ্জেকশন-এর জন্য ছাড় মেলেনি কোথাও। মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র-এর চিঠি নিয়ে এসএসকেএমে চিকিৎসার জন্য গেলেও ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে।
২০১৩ সালে গণেশের পরিবার জানতে পারে, গণেশের দুটি কিডনিই নষ্ট। কলকাতার অ্যাপোলোতে চিকিৎসার পিছনে ১৩ থেকে ১৪ লাখ টাকা খরচ হয়। এমনকি জমি, সম্পত্তি বিক্রি করেও ওষুধপত্র কেনাকাটা থেকে প্রতি সপ্তাহে ডায়ালিসিস করতে গিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা দাঁড়িয়েছে তাঁদের পরিবারের। চোখের জলে হাত জোড় করে বাঁচার তাগিদে চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতার আবেদন করেন অসহায় গণেশ মণ্ডল ও তাঁর পরিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর কাছে।
সরকার যদি মুখ তুলে না তাকায়, তবে অকালে মৃত্যুর কোলে পড়তে হবে অসহায় পরিবারের গণেশ মণ্ডলকে। আট বছরের ছেলে অরিত্র ও স্ত্রী বুল্টি মণ্ডলকে নিয়ে সংসার তাঁর। তাঁদের কে দেখবে, এই চিন্তাই গণেশকে কুরে কুরে খাচ্ছে।