হাওড়ার বাঁকড়া নিবাসী সেখ আলমগীর। ষাটোর্ধ্ব এই প্রৌঢ় বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন নিজের ছেলের দ্বারা। ছেলে এবং ছেলের বউ মারধর করে এক রাতে তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে, অভিযোগ এমনটাই। ছেলে তাঁর এই বাড়িটির দখল নিতে চেয়েছিল। সেটা না দেওয়াতেই নাকি এই অত্যাচার এবং বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া।
তারপর বিভিন্ন দরজায় ঘুরেছেন তিনি। কোনও সময় হাওড়া পুলিস, কোনও সময় কমিশনারেট। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তারপরই মামলা রুজু করেন কলকাতা হাইকোর্টে। বিচারপতি শম্পা সরকারের নির্দেশেই তিনি বাড়ি ফেরার অনুমতি পান। পুলিসের উপস্থিতিতে রবিবার বাড়ি ফেরেনও।
অভিযোগ, ছেলের অত্যাচারে বাড়িছাড়া ২০১৯ সাল থেকে। তাঁর দাবি, বাবাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে ওই বাড়িতেই বসবাস করছেন ছেলে এবং পুত্রবধূ। ছেলের দাবি, তাকে লিখে দিতে হবে সমস্ত সম্পত্তি। তা না হলে সে বাবা-মায়ের দায়িত্ব নেবে না। সম্পত্তি লিখে দিতে নারাজ শেখ আলমগীর। কারণ তাঁর আরও সন্তান রয়েছে, যাদের মধ্যে দুজন কন্যাসন্তান। তাদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বড় ছেলের এই প্রস্তাবে রাজি হননি তিনি। যদিও ছেলে এবং তার স্ত্রীর দাবি, তাঁরা বাবাকে বাড়ি থেকে বের করে দেননি। উনারা নিজেরাই বেরিয়ে গিয়েছেন। তবে হাইকোর্টের নির্দেশে তাঁরা ফিরলে তাঁদের আপত্তির কিছু নেই।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকার উদ্বিগ্ন হয়ে মন্তব্য করেছেন, কেন এই সমাজ আমাদের দেখতে হবে। কেন পুত্রের কাছে বিতাড়িত হবেন পিতা। পাশাপাশি তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাওড়া পুলিসের সহায়তায় শেখ আলমগীর ও তাঁর পরিবারকে বাড়ি ফেরাতে হবে। আজ হাওড়া পুলিস শেখ আলমগীর ও তাঁর পরিবারকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিল। ছেলের সাথে মনোমালিন্য মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বাবা। কিন্তু ভবিষ্যত্ কী দাঁড়াবে, তা এখনই পরিষ্কার নয়।